রাতভর কাজ করে পরদিন সিলেট নগরীর বিভিন্ন ভাঙারির দোকান ও আড়তে নিয়ে এসব বিক্রি করেন।
শাহজাহান মিয়া বলেন, একসময় তিনি সরাসরি ঢাকা, রাজশাহী ও যশোরে কোম্পানির কাছে মালামাল বিক্রি করতেন। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে ব্যবসায় সংকট দেখা দেয়। ঢাকা ও বরিশালের আড়তদাররা মালামাল ক্রয় করলেও বিল আটকে রাখেন। তারা জানান অপসোনিন কোম্পানি বিল দিতে দেরি করছে। এতে করে পুঁজি না থাকায় সংকট দেখা দেয়। এরপর থেকে সিলেটের বাইরে সরাসরি মালামাল পাঠানো বন্ধ করে দেন। বর্তমানে তিনি সিলেটের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে মালামাল বিক্রি করেন।
শাহজাহান মিয়া আরও বলেন, এই ব্যবসাতেও রয়েছে বড় সিন্ডিকেট। কোম্পানি দাম নির্ধারণ করে দেয়। আবার কখনো মালামাল নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে করে সংকট তৈরি হয়। আমরাও বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।
নগরীর ভার্থখলা এলাকার ভাঙারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, সিলেটে শতাধিক ভাঙারি ব্যবসায়ী গরুর হাড়সহ উচ্ছিষ্টের ব্যবসা করেন। একসময় জমজমাট ছিল। এখন শুধু হাড়ের ব্যবসা কেউ করেন না। ভাঙারি পণ্যের সঙ্গে হাড়ের ব্যবসা করছেন।
তিনি বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, পথশিশু ও বিভিন্ন বাজারের পরিচ্ছন্নতার কাজ যারা করেন তাদের কাছ থেকে আমরা হাড় কিনে থাকি। পরে এগুলো প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকা, বরিশাল ও যশোরে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, প্রতিকেজি হাড় ১৪-১৫ টাকা দরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয়। প্রতিমাসে ৮-১০ টন মালামাল সিলেট থেকে বিক্রি করা যায়। ঈদ বা অন্য কোনো উৎসব এলে আরও বেশি কেনাবেচা হয়।
মোহাম্মদ হোসেন বলেন, পশুর হাড় দিয়ে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ক্যাপসুলের কাভার, নাড়ি দিয়ে অপারেশনের সুতা, রক্ত দিয়ে পাখির খাদ্য, চর্বি দিয়ে সাবান তৈরি করা হয়। সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল হিসেবেও হাড় ব্যবহৃত হচ্ছে। বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় পশুর শিং চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা বিদেশে পাঠান।